1. editor@islaminews.com : editorpost :
  2. jashimsarkar@gmail.com : jassemadmin :

চাকুরী বনাম ব্যবসা!

আমি আমার এই ৮ বছরের প্রফেশনাল ক্যারিয়ারে দেখেছি আমাদের মধ্যে সবসময় একটা বিভাজন কাজ করে। সেটা হচ্ছে চাকরি বনাম ব্যবসা। বস বনাম কর্মচারী। এটা আসলে শুরু থেকেই চলে আসছে কম আর বেশি। এখান থেকে সহজে বের হওয়া সম্ভব না। আবার এই সমস্যাটাকে এক এক জন এক এক ভাবে দেখে থাকে। কেউ এটাকে প্রফেশনাল ভাবেই খুব স্বাভাবিক মনে করে থাকে, কেউ আবার এটাকে খুবই বিরক্তিকর একটা সিচুয়েশন মনে করে থাকে। যার যার যায়গা থেকে তার তার মত করে যুক্তি থাকে।

যেমন, অনেক প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী জব সুইচ করে ফেলে, কিন্তু আগে থেকে কিছু জানায়না। হুট করে দেখা যায় উনি আর অফিসে আসছেন না। পরবর্তিতে জানা যায় উনি অন্য কোথাও জয়েন করেছে। আবার অনেক প্রতিষ্ঠান আছে, যারা অধিনস্থ কেউ জব সুইচ করলে শেষ মাসের বেতনটা টাইম মত দেয় না। অনেক দেরি করে দেয়। কিছু প্রতিষ্ঠান হয়ত দেয়ই না।

অনেকেই আবার বাসার ছাদে উঠে মনে মনে বসের ১৪ গুস্টি উদ্ধার করে থাকে। আবার অনেক বস হয়ত আলোচনাতে তার অধিনস্থদের নিয়ে হতাশা, রাগ প্রকাশ করতে থাকে। এরকম আরো অনেক কিছুই হয়ত আছে, আমি সেই কমপ্লিকেশনে যাচ্ছি না। আমি শুধু কিছু সিমিলারিটি দেখানোর চেষ্টা করবো।

চাকরিতে আমরা আসলে কী করি?
চাকরিতে আমরা আসলে আমাদের এক বা একাধিক স্কীল বিজনেস অর্গানাইজেশনের কাছে সেল করি। বিনিময়ে আমরা একটা পারিশ্রমিক পাই। এখানে ক্রেতা হচ্ছে আমার অরগানাইজেশন। তাই আমাকে তার তৈরি করা বেশ কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয়। আমাদের পন্য যদি কাস্টমারের নিড ফিল না করে তাহলে কিন্তু ক্রেতা একটু আধটু রাগারাগি করেই থাকে। তাই এই ক্ষেত্রে যেহেতু আমাদের ক্রেতা হচ্ছে আমাদের অরগানাইজেশ, তাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তারা আমাদেরকে কাজের প্রেশারের মধ্যে রাখে।

কাজে অসুন্তষ্ট হলে বকা ঝকাও করে থাকে ক্ষেত্র বিশেষে। আমরা কেমন পারফর্ম করছি তার উপর ডিপেন্ড করে আমাদের কাজের রেট বাড়বে নাকি বাড়বেনা। আমাদের পদোন্নতি হবে কি হবে না। আবার অরগানাইজেশনের ক্লায়েন্ট কমে গেলে/ব্যবসা খারাপ গেলেও আমাদের পারিশ্রমিক একই রকম থাকে। তখন অরগানাইজেশনের জমানো টাকা/ইনভেস্টক্রীত টাকা থেকে আমাদের পারিশ্রমিক দেয়া হয়ে থাকে।

ব্যবসায়িরা কী করেন?
ব্যাবসায়িরা মুলত তাদের অধিনস্থ সকলের স্কীল এবং নিজেদের স্কীল মিলিয়ে যে স্কীলটা হয়, তা ক্লায়েন্টের কাছে বিক্রি করে থাকে। এখানেও পার্ফরমেন্স ভাল হলে ক্রেতা বাড়ে। প্রতিষ্ঠানের সাইজ বড় হয়। ব্যবাসার লাভ বাড়ে। যার একটা অংশ অধিনস্থদের স্কীল ডেভেলপমেন্ট, ইঙ্ক্রিমেন্ট সহ নানান কাজে ব্যাবহার করা হয়। এখানে পার্ফরমেন্স খারাপ হলে ক্রেতার কথা শূনতে হয়। ক্লায়েন্ট কমা শুরু করে। মার্কেট পসিশনিং ডাউন হতে থাকে।

মুল কথা হচ্ছে দুই যায়গাতেই আসলে স্কীল সেল হচ্ছে। চাকরি যারা করেন তারা সেল করে থাকেন তাদের অরগানাইজেশনের কাছে, আর ব্যবসায়িরা সবার সম্মিলিত স্কীল সেল করে থাকেন ক্লায়েন্টের কাছে। এখন, লং রানের সফলতার ক্ষেত্রে যখন কন্ডিশনটা উইন উইন হয় তখন সেখানে কাজ করে মজা পাওয়া যায়। উইন উইন পার্টটা আসলে সব কিছুর উপরেও নির্ভর করবে। কাজের পরিবেশ, টাকার ফ্লো, পদন্নতি, ব্যাবসার প্রসার ইত্যাদি। এখানে ব্যবসা আগে বাড়লেই অধিনস্থ সবার সুযোগ সুবিধা বাড়বে, আবার অধিনস্থ যারা আছেন, তাদের গ্রোথ হলেই ব্যাবসা আগে বাড়বে।

তাই সবার ভেতর যদি টিম ওয়ার্কের এটিটিউট থাকে, টিম হিসেবে কাজ করার ইচ্ছা থাকে, ভিতরে ফিলিং এবং ডেডিকেশন থাকে, চেইন অফ কমান্ড ঠিক থাকে, তাহলে আসলে অনেক কিছুই একসাথে করা সম্ভব।

নাহিদ হাসান
তথ্যসূত্র: গ্রো উইথ নাহিদ ডটকম।

More News Of This Category