1. editor@islaminews.com : editorpost :
  2. jashimsarkar@gmail.com : jassemadmin :

ঈদ যাত্রায় ভোগান্তিই যেন নিয়তি!

ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানী বা কর্মস্থলের জায়গা ছেড়ে আপনজনদের কাছে ফেরার পালা শুরু হয়ে গেছে পুরোদমে। নীড়ে ফেরার এই স্রোতধারায় ঈদের চাপ লেগেছে বাস টার্মিনালগুলোতে। আর বাসের অতিরিক্ত ভাড়া, নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে দেরি করে আসাসহ রাস্তার যানজটের অনিশ্চয়তার মতো সমস্যাগুলোকে নিয়তির সঙ্গে মিলিয়ে মেনে নিয়েই ঘরে ফিরছেন সবাই।

রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, ভোর থেকেই যাত্রীরা ভিড় করছেন টার্মিনালটিতে। কেউ বসে আছেন অগ্রিম টিকিট কাটা বাসের অপেক্ষায় আর কেউবা আছেন টিকিট পাওয়ার অপেক্ষায়।

মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন উত্তরবঙ্গ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, শেরপুর, জামালপুর ও সিলেট রুটের দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গ ও সিলেট রুটের ক্ষেত্রে অগ্রিম টিকিটের যাত্রীদের দেখা গেলেও বাকি অন্যান্য রুটের ক্ষেত্রে অগ্রিম টিকিটের কোনো বালাই নেই। যাত্রীরা আসছেন, টিকিট নিচ্ছেন, বাসের সিট পরিপূর্ণ হলেই বাস ছেড়ে দিচ্ছে।

তাছাড়া এই রুটের পরিবহনগুলোর ক্ষেত্রে নেই তেমন কোনো অতিরিক্ত ভাড়ার অভিযোগ। এ কারণেই ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট সংগ্রহ করতে দেখা গেছে যাত্রীদের। আবার টার্মিনাল এলাকা ছাড়াও মহাখালী এলাকার রাস্তার পাশেও দেখা গেছে গাড়ির দীর্ঘ লাইন।যাত্রীদের ভিড়।

টাঙ্গাইলের নিরালা পরিবহন ও বিনিময় পরিবহন সাধারণ ভাড়ার চেয়ে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশি নিচ্ছে। এছাড়া ময়মনসিংহ, শেরপুর ও জামালপুর রুটের বাসগুলোর ক্ষেত্রেও ৫০ টাকার বেশি অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের খবর মেলেনি। কিন্তু উত্তরবঙ্গ রুটের বাসগুলোর ক্ষেত্রে অগ্রিম টিকিট দেওয়া থেকে শুরু করে ভাড়া পর্যন্ত ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন যাত্রীরা। তবে বাড়ি ফেরার আনন্দে বা যাওয়ার মানসিক বাধ্যবাধকতার জন্য এসব ভোগান্তিকে সহজে মেনে নিয়েই ফিরছেন বাড়িতে।

অভিযোগ রয়েছে, কাউন্টার থেকে ইচ্ছে করেই বিক্রি হয়ে গেছে বলে অগ্রিম টিকিট আটকে রাখা হয়। এরপর যাত্রীর চাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা অতিরিক্ত দামে বিক্রি করা হয়। যে কারণে রাজধানীর অন্যান্য বাস টার্মিনালগুলোতে অগ্রিম টিকিটের প্রাধান্য বেশি থাকলেও এই টার্মিনালে তা নেই।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ অভিমুখী একতা পরিবহনে মঙ্গলবার (১২ জুন) অগ্রিম টিকিট করেছিলেন আব্দুল আলীম ও তার তিন বন্ধু। তারা রাজধানীতে গার্মেন্টসে কাজ করেন। ঈদে বাড়ি ফিরছেন সবাই একসঙ্গে অতিরিক্ত ভাড়ায় অগ্রিম টিকিট কিনে। তারা বলেন, আমরা গতকাল একতা পরিবহনে এসে টিকিট কিনেছি। এক একটা সিট সাড়ে ৭০০ টাকা করে তিন হাজার টাকা রেখেছে। অথচ টিকিটে লিখে রেখেছে দুই হাজার ৫২০ টাকা। তারপর বাস ছাড়ার যে পূর্বনির্ধারিত সময় ছিল, সে সময়েও বাস ছাড়ছে না। কখন ছাড়বে তার কোনো সঠিক সময় জানাচ্ছে না। তবে এসব কিছু মেনে নিই। প্রতিবারই তো হয়। এটাকে ভাগ্য বলেই মেনে নিই।

একতা পরিবহনের কাউন্টারে এ অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে বলা হয়, ভাড়া অল্প কিছু বেশি নেওয়া হয়েছে, তা টিকিটে উল্লেখ করা আছে। এছাড়া উল্লেখের বাইরে অতিরিক্ত ভাড়া গ্রহণের বিষয়টি স্বীকার করেননি টিকিট বিক্রেতারা।

এদিকে, মহাখালী কাউন্টারে যাত্রীদের দুর্ভোগ নিরাময়ে রয়েছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) স্টল ও সঙ্গে অভিযোগ বাক্স। সেখানে দায়িত্বরত ইন্সপেক্টর এনামুল হকের কাছে গিয়ে জানা যায় এই রুটের নির্ধারিত ভাড়া অনুসারে চারজন যাত্রীর মোট টিকিট মূল্য আসতে পারে দুই হাজার ২৫০ টাকা।যাত্রীদের ভিড়। এনামুল বলেন, আমরা অভিযোগ পেলে তৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করি। আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন। তিনি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এসব সমস্যার সমাধান করেন। এ সময় তিনি এ অভিযোগ রেখে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বাস দেন।

এ বিষয়ে নওগাঁগামী শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের যাত্রী শফিকুল বলেন, বাসের অগ্রিম টিকিটের ক্ষেত্রে এই কাউন্টারগুলোতে এটা সবসময়ই হয়। আমি গত ৮ জুন টিকিট কেটেছিলাম। টিকিট সঠিক দামে পেয়েছি, কারণ আমার এই পরিবহনের কর্মকর্তার রেফারেন্স ছিল। কিন্তু আমি টিকিট কাটার সময় দেখেছিলাম তারা অন্য যাত্রীদের বলছে যে, টিকিট নেই। আবার আজকে এসে দেখি বেশি দামে টিকিট বিক্রি করতে। আর বাস ছাড়ার সময়ের ব্যাপারেও কোনো নিশ্চয়তা নেই। আমার বাসের আগের বাসটিই এখনও আসে নি।

আবার এ ধরনের কোনো অভিযোগ নেই সিলেট রুটে চলাচলকারী বাসগুলোর ক্ষেত্রে। নির্দিষ্ট সময়ে দুর্ভোগহীন ঈদযাত্রায় আনন্দিত থাকতে দেখা গেছে সেসব যাত্রীদের।

তথ্যসূত্র: বাংলানিউজ ডটকম।

More News Of This Category