1. editor@islaminews.com : editorpost :
  2. jashimsarkar@gmail.com : jassemadmin :

সবচেয়ে বেশি বিদেশী শিক্ষার্থী ড্যাফোডিলে!

ধানমন্ডির ৩২ নম্বর থেকে সোবহানবাগের দিকে এগোতে থাকলে প্রায়ই চোখে পড়বে ভিনদেশী ছেলেমেয়েদের। কারো সঙ্গে কথা বলতে গেলে হয়তো শোনা যাবে ভাঙা বাংলায় দু-একটি শব্দও। বেশভূষা কিংবা বয়স অনুমান করে খুব সহজেই বোঝা সম্ভব তারা সবাই শিক্ষার্থী, বাংলাদেশে এসেছেন উচ্চশিক্ষার জন্য।

একটু খোঁজ নিলেই দেখা যায় তাদের অধিকাংশই পড়ছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে। বিশ্ববিদ্যালয়টির অস্থায়ী ক্যাম্পাস সোবহানবাগে হওয়ার কারণেই বিদেশী শিক্ষার্থীদের আনাগোনা এখানে চোখে পড়ার মতো। আজকের আয়োজনজুড়ে রয়েছে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশী শিক্ষার্থীদের কথা—

উচ্চশিক্ষা প্রদানে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলার কথা বলছে বাংলাদেশ। উন্নত মানের শিক্ষা ব্যবস্থা এবং কম খরচে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ দিতে সক্ষম দেশের নামি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। যার ফলে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় এখন অনেক ভিনদেশী শিক্ষার্থী পড়তে আসছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের ২০১৭ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন মতে, সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মিলিয়ে বাংলাদেশে এখন বিদেশী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ৯৭৭ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিদেশী শিক্ষার্থী (৩৫০ জন) রয়েছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে।

বিশ্ববিদ্যালয়টির সহকারী রেজিস্ট্রার ও ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মারুফ চৌধুরী বলেন, ‘উচ্চশিক্ষায় আন্তর্জাতিক মান রক্ষার কারণে বিদেশী শিক্ষার্থীদের প্রথম পছন্দে পরিণত হয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। বর্তমানে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে সোমালিয়া, নাইজেরিয়া, জিবুতি, নেপাল, ইথিওপিয়া ও তুরস্ক থেকে আসা সাড়ে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছেন।’

প্রসঙ্গক্রমে মারুফ চৌধুরী আরো একটি চমকপ্রদ তথ্য দেন। তিনি জানান, ভিনদেশ থেকে শুধু ছেলে শিক্ষার্থীরাই এখানে পড়তে আসেন না, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মেয়ে শিক্ষার্থীও পড়তে আসছেন। বর্তমানে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে প্রায় ৭০ জন মেয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছেন।

তিনি আরো জানান, মাস্টার্স ইন পাবলিক হেলথ বিষয়ে এখানে সবচেয়ে বেশি বিদেশী পড়ছেন। তাদের সংখ্যা ৬০ জন। এরপর পর্যায়ক্রমে রয়েছে এমবিএ, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগ, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, পুষ্টি ও খাদ্য প্রকৌশল বিভাগ, ইংরেজি বিভাগ এবং উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণেই কথা হয় কয়েকজন বিদেশী শিক্ষার্থীর সঙ্গে। তাদের একজন দুইগো বোস্তাঙ্গি। তুরস্ক থেকে আসা এ নারী শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি এখানে ইংরেজি বিষয়ে স্নাতকোত্তর পড়ছি। শিক্ষার পরিবেশ অত্যন্ত ভালো। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অসম্ভব আন্তরিক। তাদের ভালোবাসা ও বন্ধুতার কারণে আমি ভুলে গেছি আমার পরিবার ছেড়ে আসার কষ্ট।’

অন্যদিকে নাইজেরিয়া থেকে আসা হামিসু হোসাইন হামিসু পড়ছেন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় সেমিস্টারে। তিনি বলেন, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা একটু বেশিই আন্তরিক। শুধু পড়ালেখা নয়, যেকোনো সমস্যার কথা তাদের কাছে বলতে পারি। তারা তত্ক্ষণাৎ সমাধান দেন। এত আন্তরিক শিক্ষক আমি আমার জীবনে খুব কম পেয়েছি।

সোমালিয়ার শিক্ষার্থী ইদিল আব্দুল্লাহি শেখ হাসানের সঙ্গে কথা বলার এক ফাঁকে জানতে চেয়েছিলাম তিনি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা জেনেছেন কীভাবে। উত্তরে বলেন, সোমালিয়ায় বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির অ্যাফিলিয়েশন রয়েছে। সেখান থেকে জেনেছি ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা।

বেদ প্রকাশ শর্মা অবশ্য জেনেছেন তার এক প্রতিবেশী বড় ভাইয়ের কাছ থেকে। সেই ভাই বাংলাদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষার সনদ নিয়ে ফিরে গেছেন নিজ দেশ নেপালে। বেদ প্রকাশ বলেন, ওই বড় ভাই আমাকে জানান ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির কথা। তার মতে, বাংলাদেশের অন্যতম সেরা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে ড্যাফোডিল।

এখন বড় ভাইয়ের কথার প্রমাণ পাচ্ছি। ড্যাফোডিল সত্যিই এক অনন্যসাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়। বিশেষ করে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থ্থায়ী ক্যাম্পাস আমাকে ভীষণভাবে মুগ্ধ করে। এত সুন্দর ক্যাম্পাস আমি জীবনেও দেখিনি।

বাংলাদেশে বিদেশী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ ক্যাম্পাস ভরে উঠছে বিদেশী শিক্ষার্থীদের কলরবে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতনরা মনে করেন, বিশ্বের সব দেশ থেকে একদিন হাজার হাজার শিক্ষার্থী পড়তে আসবে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে। এমন স্বপ্ন পূরণ হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

More News Of This Category