1. editor@islaminews.com : editorpost :
  2. jashimsarkar@gmail.com : jassemadmin :

সফল ব্যবসায়ী বশির আহমদ!

দেশে শুধু রেমিটেন্স প্রেরণ নয় সফল বিনিয়োগকারী হিসেবে আমাদের পরিচিতি ও অবস্থান শক্তিশালী করতে হবে। জনাব বশির আহমদ ব্রিটেন তথা ইউরোপে প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে একজন পরিচিত মুখ। সফল ব্যবসায়ী ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব। তিনি সবসময় চ্যালেঞ্জ নিতে ভালবাসেন। বিশ্বাস করেন পরিশ্রমে। শ্রম ও অধ্যবসায় তাকে এনে দিয়েছে অনেক সাফল্যে। চলার পথে নানা প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলার অদম্য সাহস ও আত্মবিশ্বাসই তাকে নিয়ে এসেছে আজকের এই অবস্থানে।

সিলেট শহরের কাজলশাহ নিবাসী জনাব চেরাগ আলী খানের দ্বিতীয় পুত্র বশির আহমদ। বেড়ে উঠেছেন সিলেট শহরের আলো বাতাসে। সিলেট এইডেড হাই স্কুল থেকে কৃতিত্বের সাথে মাধ্যমিক, মদনমোহন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও বিকম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বশির আহমদ দেশে-বিদেশে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত। পূর্ব লন্ডনে এয়ার্ডপ্রাপ্ত রেস্টুরেন্ট কাস্তুরীর সত্বাধিকারী। হল্যান্ডের সুনামধন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কোহিনূর হোল্ডিং এ্যান্ড ক্যাটারিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশে নুতন ধারার ফাইনান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন রক এসেট ম্যানেজম্যান্ট এর ডাইরেক্টর।

এছাড়া তিনি প্রবাসীদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের একজন সফল বিনিয়োগকারী। তিনি বৃটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের ডেপুটি ডাইরেক্টর জেনারেল হিসেবে বৃটেন ও বাংলাদেশের ব্যবসার প্রসার ও উভয় দেশের বাণিজ্যিক সেতু বন্ধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। বৃটেনে আসার আগে জনাব বশির আহমদ ১৯৭৪-২০০৫ পর্যন্ত হল্যান্ডের বাসিন্দা ছিলেন। সেখানে তার কর্মজীবন শুরু হয় ইভিস হোটেল গ্রুপে। ১৯৮১ সাল পর্যন্ত ফুড এন্ড ব্যাবারিজ ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর হল্যান্ডের আরনেম শহরে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন কোহিনূর হোল্ডিং এ্যান্ড ক্যাটারিং। কোহিনূর হল্যান্ডে ২য় এবং সফল ইন্ডিয়ান রেষ্টুরেন্ট।

একান্ত আলাপচারিতায় বশির আহমদ জানালেন, আজকের এই অবস্থানে আসার পেছনে কোহিনূর রেষ্টুরেন্টের অবদান অনস্বীকার্য। এটি যেন মহামূল্যবান কোহিনূরের মত আলো ছড়াতে থাকে। ১৯৮৫ সালে ডাচ চেম্বার অব কমার্স তাকে প্রথম এশিয়ান ম্যান অব দ্যা ইয়ার সম্মানে ভূষিত করে। এরপর তাকে আর পেছনে ফেরে তাকাতে হয়নি। বশির আহমদ মূলত ১৯৮০ সাল থেকেই বৃটেনে আসা যাওয়া শুরু করেন। তখন থেকেই বিসিএ ও বিবিসিসি‘র সাথে সম্পৃক্ত হন। বিলেতের সামাজিক ও ধর্মীয় পরিবেশ আর কারি শিল্পের সাথে তার সখ্যতা গড়ে উঠে। তিনি লন্ডনে প্রতিষ্ঠা করেন কাস্তুরী রেস্টুরেন্ট এ্যান্ড ক্যাটারিং। তার স্ত্রী জাহানারা চৌধুরীও এখানকার পরিবেশে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। ফলে শুরু হয় বৃটেনে স্থায়ীভাবে বসবাস।

স্বামী-স্ত্রীর প্রানান্ত প্রচেষ্টায় কাস্তুরী এখন লন্ডন সিটির মধ্যে অন্যতম সফল রেস্টুরেন্ট। এটি ২০০৫ সালে বৃটিশ কারি এওয়ার্ড, ২০০৬ সালে ইউকে বেস্ট ডিশেস এওয়ার্ডে ভূষিত হয়। এছাড়া ২০০৬ সালে ইনভেস্টর ইন পিপল এওয়ার্ড লাভ ছিল এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য খুবই গর্বের বিষয়। কারণ এই এওয়ার্ডটি শুধু খাবারের মানের উপর ভিত্তি করেই দেয়া হয়না। এটা দেয়া হয় ভাল সার্ভিস, দক্ষ স্টাফ, ফুড এ্যান্ড হাইজিন সহ পরিপূর্ণ পেশাদারিত্বের উপর ভিত্তি করে। এই সাফল্যের পেছনে বশির আহমদ তার গ্রাহকদের কাছে কৃতজ্ঞ। কারণ তারা কাস্তুরির সুস্বাদু খাবার ও আন্তরিক সেবায় পরিতৃপ্ত।

বশির আহমদের এই সাফল্যের পথ এতটা মসৃণ ছিল না। অনেক সংগ্রাম ও ত্যাগ-তিতিক্ষার পর তিনি এই অবস্থানে এসে দাড়িয়েছেন। এখানে আরেকটা বিষয় খুবই তাতপর্যপূর্ণ যে তিনি যখন ১৯৭৪ সালে টেমস নদীর দেশ লন্ডনে আসেন তখন হিথ্রো বিমানবন্দরে পর্যাপ্ত আর্থিক স্বচ্চলতা না থাকায় কর্তৃপক্ষ তাকে ঢ*কতে দেয়নি। পাঠিয়ে দেয় আর্মস্টেল নদীর দেশ হল্যান্ডে। তখন তার সাথে ছিল মাত্র ৩৫ পাউন্ড। সেখানে ছিল না তার কোন আত্বীয়, ছিল না কোন সাহায্যের লোক। কিন্ত ছিল সংকল্প আর আত্মবিশ্বাস।

প্রচন্ড পরিশ্রমী বশির আহমদ আমাদের যুব সমাজকে উতসাহিত করে বলেন শিক্ষা, সততা, অধ্যবসায় আর দৃঢ় বিশ্বাস থাকলে যে কেউ জীবনে সফল হতে পারবে। দৃঢ় মনোবল নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি আমাদের কারি ইন্ডাস্ট্রির ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে আমাদের নতুন প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বাংলাদেশে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার জন্য তিনি প্রবাসীদের প্রতি আহবান জানান। তিনি মনে করেন, দেশে শুধু রেমিটেন্স প্রেরণ নয় সফল বিনিয়োগকারী হিসেবে আমাদের পরিচিতি ও অবস্থান শক্তিশালী করতে হবে।

পারিবারিক জীবনে বশির আহমদের একছেলে ও একমেয়ে নিয়ে সুখের সংসার। সহধর্মীনি জাহানারা আহমদ চৌধুরী নিজস্ব কোম্পানীতে একাউটেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ছেলে সুমন আহমদ মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানীর কনসালটেন্ট ও মেয়ে টিনা আহমদ ইনভেসমেন্ট ব্যাংকের হেড ফান্ড ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত।

তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।

More News Of This Category