নয়টা-পাঁচটা অফিসের কথা শুনলেই অনেকের চোখ কপালে উঠার উপক্রম হয়! আবার নিজেও কিছু করতে চান। কিন্তু সময় আর সুযোগ এক সাথে বাধা কখনও কখনও কঠিন হয়ে যায়। বিশেষ করে বাচ্চা হবার পর মেয়েদের বাইরে কাজ করাটা খানিক কষ্টকর হয়ে উঠে বৈকি! একক পরিবারে এই সমস্যা বেশি।
অনেক সময় বাচ্চাকে দেখাশুনা করার জন্য বিশ্বস্ত কাজের লোক মেলে না। সব মিলে পরিস্থিতিই তাকে বাধ্য করে ঘরে বসে কাজ করতে। তবে সেজন্য সবার আগে প্রয়োজন ইচ্ছাশক্তি। প্রয়োজন কাজ উপযোগী প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা। দক্ষতা অনুযায়ী ঘরে বসে যেসব ক্ষেত্রে কাজ চালিয়ে যাওয়া যায় সেগুলোর মধ্যে কয়েকটি হলো-
নেটওয়ার্কিং- এর কাজ : আউটসোর্সিং সাইটের কাজগুলো বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা থাকে। যেমন: ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ডিজাইন ও মাল্টিমিডিয়া, গ্রাহকসেবা, বিক্রয় ও বিপণন, ব্যবসা-সেবা, নেটওয়ার্কিং ও তথ্যব্যবস্থা, লেখা ও অনুবাদ, প্রশাসনিক সহায়তা ইত্যাদি। নেটওয়ার্কের কাজ পেতে এই সাইটগুলো ভিজিট করতে পারেন- www.odesk.com , www.freelancer.com
বুটিক হাউজ : সৃজনশীল মানুষের জন্য বুটিক ব্যবসা হতে পারে একটি আদর্শ পেশা। প্রাথমিক পর্যায়ে ব্লক বা বুটিকের জন্য ৫০-৬০ হাজার টাকার মতো পুঁজি লাগবে। দ্রুত কাজ এগিয়ে নেবার জন্য সাথে দক্ষ ২-৩ জন কর্মচারী নিতে হবে। এ ছাড়া ব্লক বুটিকের জন্য প্রয়াজনীয় দ্রব্য যেমন- টেইলারিং মেশিন, কাঠের ডাইস, রং, বিভিন্ন রংয়ের সুতা, সুই ও সবশেষে বিভিন্ন ধরনের কাপড় লাগবে।
দেশে এবং দেশের বাইরে বুটিক হাউজের নিজস্ব পোশাকের যথেষ্ট চাহিদা তৈরি হয়েছে। সেক্ষেত্রে সফলতা নির্ভর করবে পণ্যের ডিজাইন, কাপড়ের সেলাই, গুণগত মান, আধুনিকতা ও ভিন্নধর্মী উপস্থাপনার ওপর।
বিউটি পার্লার : এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে তারপর নিজের মত করে কাজে নামতে পারেন। আরেকটা বিষয় হল এ ব্যবসার সফলতা ও সমৃদ্ধি অনেকটাই নির্ভর করে স্থানের ওপর। ব্যবসায়ের পরিচিতি ও সুনাম ছড়িয়ে পড়ে সেবা আর ভালো পরিবেশের কারণে। যদি বাসাতেই পার্লার খুলতে চান তবে লক্ষ্য রাখতে হবে, যে রুমটি পার্লারের কাজে ব্যবহার করবেন সেখানে যেন পর্যাপ্ত আলো, বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকে।
রুম সংলগ্ন বাথরুম এবং বাইরে থেকে ঢোকার আলাদা দরজারও ব্যবস্থা থাকতে হবে। সেই সঙ্গে কক্ষের সামনে ছোট্ট একটি বসার জায়গা রাখবেন যাতে গ্রাহকের সঙ্গে আসা অন্যরা সেখানে বসে অপেক্ষা করতে পারেন।
মাটির গয়নায় আয় : শিল্পমনা যে কেউ মাটির গয়না তৈরি ও বিক্রী করে সাবলম্বী হতে পারেন। এ ব্যবসায় বেশি মূলধনের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু আয় হয় ভাল। ৪ থেকে ৫ হাজার টাকার মধ্যে মাটির গয়না তৈরি করার জন্য প্রয়োজনীয় সব উপকরণ পাওয়া যাবে। মূল উপকরণ এঁটেল মাটি।
এছাড়া প্রয়োজন হয় কানের দুলের আংটা, ম্যাটেরিয়ান পাথর, নরমাল সাদা পাথর, চিকন তার, সলিউশন, টারসেল, ব্লকের রঙের গুঁড়া ও কেমিক্যালস, কার্ড পেপার ইত্যাদি।
ঘরে বসে যে কাজই করুন না কেন প্রাধান্য দিতে হবে প্রযুক্তিকে। বাসায় কাজ করার জন্য অফিস ডেকোরেশন করতে হবে পরিবারের মতামত নিয়ে। নিজের প্রচেষ্টার পাশাপাশি পরিবারের সদস্যরা সাহায্য করলে সফলতার সাথে এগিয়ে যাওয়া যায় বহুদূর।