প্রস্তাবিত বাজেটে সিটি করপোরেশন এলাকার কারও যদি আট হাজার বর্গফুট বা এর বেশি আয়তনের গৃহসম্পত্তি থাকে, তাহলে ওই বাড়িওয়ালার আয়করের ওপর সারচার্জ বসবে। এই সারচার্জের পরিমাণ ওই বাড়িওয়ালার আয়ের ১০ শতাংশ বা কমপক্ষে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা। বাড়িওয়ালা স্বাভাবিকভাবেই নিজের খরচ কমাতে ফ্ল্যাটের ভাড়া বাড়িয়ে দেবেন।
গণপরিবহনের সমস্যা এখন প্রকট। মধ্যবিত্তদের যাতায়াতে কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্য আনতে শুরু করেছিল রাইড শেয়ারিং উবার, পাঠাওয়ের মতো গাড়ি ও মোটরসাইকেল। উবার, পাঠাওয়ের মতো রাইড শেয়ারিংয়ের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট বসিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এমনকি এসব রাইড শেয়ারিং সেবা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের ওপর ৩ থেকে ৪ শতাংশ উৎসে করও বসানো হয়েছে। এতে এসব সেবা নেওয়ার খরচ বাড়বে।
কর বসেছে পোশাকেও। দেশি ব্র্যান্ডের শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি, সালোয়ার-কামিজ কিনতে এখন থেকে বাড়তি টাকা গুনতে হবে। আগে ভ্যাট ছিল ৪ শতাংশ, এখন হয়েছে ৫ শতাংশ। খরচের কথা চিন্তা করে দেশি ব্র্যান্ডের পোশাক বাদ দিলেও রক্ষা নেই। বড় দোকান থেকে জামাকাপড় কিনলেও ৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে, যা আগে ছিল না।
বাড়ি-গাড়ির স্বপ্ন সব মধ্যবিত্তেরই থাকে। কিন্তু এই বাজেটের পর ছোট ফ্ল্যাট কিনতে গেলে খরচ বাড়বে। ১১০০ বর্গফুটের কম আয়তনের ফ্ল্যাটে ভ্যাট দেড় থেকে দুই শতাংশ করা হয়েছে। এতে ৫০ লাখ টাকার ফ্ল্যাটে অন্তত ২৫ হাজার টাকা বাড়তি গুনতে হবে। আবার নতুন গাড়ি কেনার সামর্থ্য নেই, রিকন্ডিশন্ড গাড়িতেই ভরসা মধ্যবিত্তের। সেখানেও দুঃসংবাদ। রিকন্ডিশন্ড গাড়ির অবচয়ন সুবিধা কমিয়ে দেওয়ায় গাড়ির দাম বাড়বে।
দুঃসময়ের জন্য প্রায় সব মধ্যবিত্ত পরিবারের কর্তারা সঞ্চয় করেন। ভরসা হিসেবে সঞ্চয়পত্র কিনে রাখেন। কিন্তু অর্থমন্ত্রী বাজেটে ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি শিগগিরই সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমাবেন। আবার সঞ্চয়পত্র কেনার সুযোগও কমানো হয়েছে। আগামী বাজেটে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে ২৬ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা ধার নেওয়া হবে, যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৪০ শতাংশ কম। চলতি অর্থবছরে ৪৪ হাজার কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রির করা লক্ষ্য নির্ধারণ করা আছে।
তথ্যসূত্র: প্রথমআলো ডটকম।