1. editor@islaminews.com : editorpost :
  2. jashimsarkar@gmail.com : jassemadmin :

অযথা আমরা হতাশ! জাতিগত ভাবে হতাশ!

আমরা হতাশ! আমরা সব কিছুতেই হতাশ. আসলে আমরা মানুসিক ভাবে জাতিগত হতাশ। কিন্তু কেন আমরা হতাশ হই? আসলে আমরা ভাবি রাতারাতি বড় লোক হয়ে গেলেই আমাদের হতাশা দূর হবে। কিন্তু আদৌ কি হতাশা দূর হওয়ার মুলমন্ত্র বড় লোক হওয়া? না। বড় লোক হলে হতাশা আরো বাড়ে।অর্থাৎ বড় লোক হতাশার বর্গের সমানুপাতিক।

হতাশার জন্ম হয় কোথা থেকে? এক কথায় বলতে গেলে চাওয়া, না পাওয়ার ভিত্তিতে। হতাশা নামক ব্যাধিতে আজ আমরা সবাই আক্রান্ত। হতাশা এমন এক ধরনের ব্যাধি চিকিৎসা বিজ্ঞান আজ পর্যন্ত এর সঠিক সমাধান দিতে পারে নি।আর পারবেই বা কি করে? এটা কী ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া জীবানু দ্বারা আক্রান্ত কোন রোগ? না। তাহলে নিশ্চয় এটা মনের রোগ। হ্যা।

তাহলে ডাক্তার আপনার কি সমাধান দিবে?বরং উনি আপনার/আমার কাছ থেকে শুধু সুবিধাটাই নিবে। কি সুবিধা নিবে সেটা আর নাই বা বললাম। উনারই বা আর কি করার আছে সুযোগ তো আপনি আমিই করে দিচ্ছি। আমাদের হতাশার জন্য কেউ দায়ী নয় বরং আমরা নিজেরাই দায়ী,আমাদের দৃষ্টিভঙ্গী দায়ী।

দুটি ঘটনা বলি: আমার এক বড় ভাই।উনি ইংরেজিতে অনার্স & মাস্টার্স। উনার বর্তমান পোফাইল হলো উনি স্বঘোষিত বেকার। তবে এর পক্ষে বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে তার যৌক্তিক কারন আছে তা আমরা সবাই জানি। উনার কিছু বৈশিষ্ট হলো, দিন রাত ঘুম, বাসায় বসে নিজেকে রাজ্যের ভাবা, জব মানেই ফ্রাস্ট ক্লাস জব আর সব কিছুই, মাস শেষে মেসের টাকা নিয়ে ঝামেলা, দারিদ্রতার জন্য মা বাবা কে দোষারোপ করা, কাজ না করে ভাগ্যকে দোষারোপ করা, নিজেকে অসহায় ভাবা, নিজের মৃত্যু কামনা করা।

কিন্তু কেন ভাই? আপনি ইংরেজির ছাত্র। আপনি চাইলে চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত টাকা ইনকামের অনেক পথ তৈরী করতে পারেন। আপনার তো হাত পা সব কিছুই অাছে । আল্লাহ আপনাকে সুস্থ সবল মানুষ হিসাবে বানাইছে। আপনি আপনার এই শরীর টা কাজে লাগান।আল্লাহ প্রদত্ত এর চেয়ে আর বড় কি নিয়ামত আপনি চান। একজন প্রতিবন্ধি জানে তার কত কস্ট। একবার নিজেকে অই প্রতিবন্ধির জায়গায় চিন্তা করুন। দেখবেন হতাশা নয় আশার আলো পাবেন। অাপনার, অামার সবার শিক্ষা নেওয়া উচিত নিম্নের প্রতিবন্ধক ভাইয়ের কাছ থেকে, যাকে কোন প্রতিবন্ধকতা আটকা রাখতে পারে নি।

রাত তখন ১১.৪০ (০৪.০৫.১৮) বন্ধুর মেডিকেল টেস্টের রিপোর্ট দেখিয়ে “সিলেট ইবনে সিনার” নিচে আসলাম। আমি বন্দর হয়ে মিরের ময়দান যাব আর আমার বন্ধু যাবে উপশহর। সে জন্য রিক্সা খুজছিলাম। সাথে সাথেই পেয়ে গেলাম কিন্তু গেলাম না কারন আমার মনে হল রিক্সায় গেলে সময় বেশি লাগবে। তাই সিএনজি দিয়ে যাব।

কিন্তু এখান থেকে সরাসরি সিএনজি যাবে না। তাই আবার রিক্সা খুজছিলাম বন্দর যাবার জন্য। একজন কে পেয়েও গেলাম। আর তখনি এমন কিছু একটা দেখলাম যার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না। একটু আগে আমার কাছে রিক্সাওলা ভাই টা কে একজন স্বয়ংসম্পূর্ণ মানুষ মনে হয়েছিলাম। হটাৎ আমার বন্ধু বলল দেখ উনার কিন্তু এক হাত কাটা।

আমি দেখে বিস্মিত হলাম।বন্ধুকে বিদায় দিয়ে রিক্সায় করে রওনা দিলাম। উনার বিষয়ের জানতে শুরু করলাম। ভাইয়ের বাড়ি বগুড়া। এক্সিডেন্ট এর কবলে পড়ে এক হাত হারান। হাত হারালেও তিনি মনোবল হারান নি। হতাশ হন নি। যা আছে তাই নিয়ে জীবন মরন যুদ্ধ চালিতে যাচ্ছেন। তাই অপর এক হাত ও পায়ের উপর ভর করে চালিয়ে যাচ্ছেন জীবন সংগ্রাম। উনি ইচ্ছে করলে পারতেন হাত পেতে ভাত খেয়ে জীবন চালিয়ে দিতে কিন্তু উনি তা না করে কাজ কেই বেছে নিয়েছেন।

আমাদের মাঝে এ রকম অনেক প্রতিবন্ধক ভাই বোন আছে যাদের কোন প্রতিবন্ধকতাই আটকে রাখতে পারে নাই। আমাদের সব কিছু থাকার পর আমরা হতাশ! উনারা তো হতাশ নয়। তাহলে আমরা কেন হতাশ? আসলে পার্থক্য টা কোথায় জানেন! “কেউ কেউ দেহের প্রতিবন্ধী কিন্তু মনের নয়, আর কেউ কেউ মনের প্রতিবন্ধী কিন্তু দেহের নয়।”

লেখক: মোহাম্মদ জীবন। তথ্যসূত্র: ব্যবসা ও মার্কেটিং টিপস বাংলাদেশ ফেসবুক পেইজ।

More News Of This Category